
গতকাল ৫ ই আগস্ট ২০২০ বুধবার সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র ক্রীয়া সংঘঠক মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের ৭১ তম জন্মবার্ষিকী। ১৯৪৯ সালের এই দিনে তিনি তদানীস্তন গোপালগঞ্জ মহকুমার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কাল রাত্রিতে মাত্র ২৬ বছর বয়সে জাতির পিতার হত্যাকারী মানবতার ঘৃণ্য শত্রুদের নির্মম-নিষ্ঠুর বর্বরোচিত হত্যার শিকার হয়ে শাহাদাত বরন করেন। জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরবি), রংপুর এর মাননীয় ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ডঃ মেজর নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, বিএনসিসিও।
শহীদ শেখ কামাল বাংলাদেশ ছাত্রলীগ এর একজন নিবেদিত, সংগ্রামী, আদর্শবাদী কর্মী হিসেবে ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান ও একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরোচিত ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাক হানাদার বাহিনীর কৃতজ্ঞ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক স্মৃতিবিজড়িত ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কস্থ বাসভবন আক্রান্ত হওয়ার পূর্ব মুহূর্তে বাড়ি থেকে বের হয়ে তিনি সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম ওয়ার কোর্সে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হয়ে মুক্তিবাহিনীতে কমিশনন্ড লাভ করেন ও মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি জেনারেল ওসমানীর এডিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। স্বাধীনতার পর শেখ কামাল সেনাবাহিনী থেকে অবসর নিয়ে লেখা পড়ার মনোনিবেশ করেন। তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ সদস্য ছিলেন।
বহুমাত্রিক অনন্য সৃষ্টিশীল প্রতিভার অধিকারী তারুণ্যের দীপ্ত প্রতীক শহীদ শেখ কামাল শাহীন স্কুল থেকে মাধ্যমিক ও ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে বিএ অনার্স পাস করেন। তিনি বাংলাদেশের শিল্প সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অন্যতম উৎসমুখ ‘ছায়ানট’ এর সেতার বাদন বিভাগের ছাত্র ছিলেন। স্বাধীনতা উত্তর যুদ্ধ-বিধ্বস্ত বাংলাদেশের পুনর্গঠন ও পুনর্বাসন কর্মসূচির পাশাপাশি সমাজের পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীর ভাগ্য উন্নয়নে সমাজ চেতনার উদ্ধুদ্ধকরণে মঞ্চনাটক আন্দোলনের ক্ষেত্রে তিনি প্রথম সারির সংগঠক ছিলেন। বন্ধ শিল্পীদের নিয়ে গড়ে তুলেছিলেন ‘স্পন্দন শিল্পীগোষ্ঠী’। শেখ কামাল ছিলেন ঢাকা থিয়েটারের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। অভিনয়শিল্পী হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্য অঙ্গনে প্রতিষ্টিত ছিলেন। শৈশব থেকে ফুটবল, ক্রিকেট, হকি, বাস্কেটবলসহ বিভিন্ন খেলাধুলায় প্রচন্ড উৎসাহ ছিল তার। তিনি উপমহাদেশের অন্যতম সেরা ক্রীড়া সংগঠন, বাংলাদেশ আধুনিক ফুটবলের প্রবর্তক আবাহনী ক্রীয়া চক্রের প্রকিষ্ঠাতা ছিলেন। বেরোবি ভাইস-চ্যান্সেলরের প্রফেসর নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ বলেন, শেখ কামাল জাতির পিতার সন্তান হওয়া সত্তেও একেবারেই সাধারণ জীবন যাপন করতেন।
বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী শেখ কামালের স্বল্পসময়ের বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবন এবং দেশের জন্য তার অবদান আজীবন স্মরনীয় হয়ে আছে। তিনি বলেন, তরুণ সমাজ শেখ কামালের জীবন থেকে অনেক শিক্ষা গ্রহণ করতে পারেন। এবং তার আদর্শকে অনুসরণ করে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার দিকে মনোনিবেশ করতে পারেন।