বি‌নোদনসারা দেশ

মানিকগঞ্জের তেওতা জমিদার বাড়ি নিয়ে না জানা কিছু কথা।

স্টাফ রিপোর্টার মোঃ শাহীন রেজা

শেয়ার করুনঃ

মানিকগঞ্জ জেলার শিবালয় উপজেলায় অবস্থিত তেওতা জমিদার বাড়ি। প্রাচীন একটি জমিদার বাড়ি ও প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা। এই জমিদার বাড়ি তেওতা নামক গ্রামে অবস্থিত। ইতিহাস বিদদের মতে ১৭০০ শতকে এই জমিদার বাড়িটি নির্মাণ করা হয়েছে। এ বাড়ি নির্মাণ করে ছিলেন। পঞ্চানন সেন নামক একজন জমিদার। পঞ্চানন সেন এক সময় খুবই দরিদ্র ছিলেন। তিনি মাঠে তামাক উৎপাদন করতেন। এবং সেই তামাক প্রতি বছর উৎপাদন করে বিক্রি করে এক সুময় প্রচুর ধনসম্পত্তির মালিক হন। তার পর তিনি এই প্রাসাদটি নির্মাণ করেন। কিন্তু পরবর্তিতে এখানে জমিদারি প্রতিষ্ঠিত করেন। জয়শংকর ও হেমশংকর নামের দুজন ব্যক্তি। ভারত বিভক্তির পর তারা দুজনেই ভারত চলে যায়। তার পর থেকেই বাড়িটি পরিত্যক্ত হয়ে যায়। লোকমুখে প্রচলিত তেওতা জমিদার বাড়িটির বয়স প্রায় ৩০০ বছর।

বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম ও তাঁর প্রিয়তমা স্ত্রী প্রমীলা দেবীর স্মৃতি বিজড়িত একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান। মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার তেওতা জমিদার বাড়ি। পাশেই ছিল প্রমীলা দেবীর পিতার বাড়ি। প্রমীলা দেবীর পিতা বসন্ত সেনের ভ্রাতুষপুত্র বীরেন সেনের সঙ্গে কবির সখ্যতার কারণে কবি তাঁদের বাড়িতে অবাধ যাতায়াত করতে পারতেন। কাজী নজরুল ইসলাম প্রমীলা দেবীর রূপে মুগ্ধ হয়ে লিখে ছিলেন ‘তুমি সুন্দর তাই চেয়ে থাকি প্রিয়/সেকি মোর অপরাধ’।

তেওতা জমিদার বাড়ির প্রধান ভবনের উত্তরের ভবন গুলোকে হেমশংকর এস্টেট এবং দক্ষিণের ভবন গুলোকে জয়শংকর এস্টেট নিয়ে ছিল। প্রতিটি এস্টেটের সামনে নাটমন্দির অবস্থিত, পূর্ব দিকের লাল দিঘী বাড়িটি জমিদারদের অন্দর মহল হিসাবে ব্যবহৃত হত। দিঘীতে দুটি শান বাঁধানো ঘাটলা এবং দক্ষিণ পাশে একটি চোরা কুঠুরী বা অন্ধকুপ রয়েছে। উত্তরদিকের ভবনের সামনে ৭৫ ফুট উঁচু ৪ তলা নবরত্ন মঠ রয়েছে। নবরত্ন মঠের ১ম ও ২য় তলার চারদিকে আরো ৪ টি মঠ আছে। প্রায় ৭.৩৮ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত তেওতা জমিদার বাড়িটি দেখতে দেশ-বিদেশ থেকে অনেক পর্যটকের আগমন ঘটে।

আপনিও চাইলে ঘুরে আসতে পারেন মানিকগঞ্জ শিবালয় উপজেলার তেওতা জমিদার বাড়ি।


শেয়ার করুনঃ
Show More

সম্পর্কিত খবর

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না।

Back to top button