
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, আমরা সফলভাবে করোনা মোকাবিলায় সক্ষম। যে কারণে আমাদের দেশে মৃত্যু ও সংক্রমণের হার অনেক কম এবং সুস্থতার হার অনেক বেশি; প্রায় ৯০ শতাংশ। শুধু দেশেই নয়; কোভিড মোকাবিলায় বাংলাদেশের সফলতার কৃতিত্ব এখন বিশ্বব্যাপী। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, খোদ আমেরিকার সংবাদ মাধ্যম ব্লুমবার্গ গত ৪-৫ মাসের বিশ্বব্যাপী কোভিড জরিপ শেষে বাংলাদেশকে কোভিড মোকাবিলায় ২০তম হিসেবে ও দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে এক নম্বর দেশ হিসেবে কৃতিত্ব দিয়েছে। এটি আমাদের জন্য বিরাট স্বীকৃতি। তিনি বলেন, এই জরিপে খোদ আমেরিকাই রয়েছে ৪০তম, ইউকে রয়েছে ৩৯তম অবস্থানে। আর সেখানে বাংলাদেশ ২০তম অবস্থানে।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ভারত, পাকিস্তান, ভুটান, শ্রীলঙ্কা, মিয়ানমার এই দেশগুলোরও উপরে রয়েছে বাংলাদেশ। এই কৃতিত্ব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার, দেশের চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত ব্যক্তিদের, মিডিয়াসহ সব করোনা যোদ্ধার।
করোনা মোকাবিলায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। এ লক্ষ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে সবাইকে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি দেশের মানুষের জন্য। আগামী ছয় মাসে পর্যায়ক্রমে দেশের তিন কোটি ভ্যাকসিন চলে আসবে। এই ভ্যাকসিন মানুষের কাছে সুষ্ঠুভাবে বিতরণের জন্য সরকারের যথাযথ প্রস্তুতি নেওয়া রয়েছে।
কোভিড শনাক্তে মার্চ মাসে শুরুতে মাত্র ১টি পিসিআর ল্যাব ছিল। আর বর্তমানে ১১৮টি পিসিআর ল্যাব চালু করা হয়েছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এর সঙ্গে অ্যান্টিজেন টেস্ট যুক্ত করা হয়েছে। জিন এক্সপার্ট মেশিনের মাধ্যমে কোভিড-১৯ পরীক্ষা শুরু হয়েছে। সুতরাং কোভিড মোকাবেলায় আমরা সব দিক দিয়েই এখন সেবার মান বৃদ্ধি করেছি। কোভিড মোকাবিলায় স্বাস্থ্যখাতের যথোপযুক্ত উদ্যোগ থাকায় বাংলাদেশের মানুষ স্বাভাবিক জীবনযাপন করছে, ব্যবসা বাণিজ্য চলমান রয়েছে, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিও ঊর্র্ধ্বমুখী রয়েছে।
করোনা রোগীদের চিকিৎসায় রাজধানীর ১৯টি হাসপাতালে ৩ হাজার ২৪৮টি সাধারণ শয্যা ও ২৯০টি আইসিইউ শয্যা রয়েছে। চট্টগ্রামের ৭টি হাসপাতালে ৬৮৭টি সাধারণ শয্যা ও ৪৫টি আইসিইউ শয্যা রয়েছে। এছাড়া সারা দেশের অন্য হাসপাতালে ৬ হাজার ৫৩৯টি সাধারণ শয্যা ও ২৪৭টি আইসিইউ শয্যা রয়েছে। সারা বাংলাদেশে ১৩ হাজার ৫১৬টি অক্সিজেন সিলিন্ডার, হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা ৬৭৮টি, অক্সিজেন কনসেনট্রেটর রয়েছে ৬৩৯টি।
তিনি আরো বলেন, করোনার শুরু থেকেই প্রধানমন্ত্রী মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। সে অনুযায়ী আমরা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছি। সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগ কাজ করছে। স্বাস্থ্য খাত করোনার সংক্রমণ মোকাবিলায় এরই মধ্যে সক্ষমতা দেখিয়েছে।
জাহিদ মালেক বলেন, শীতের তীব্রতার সঙ্গে সঙ্গে যদি করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পায়, সেই আশঙ্কায় আমরা আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। এ সময় কোনো উপকরণের যেন সংকট সৃষ্টি না হয়, সে জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া আছে। এছাড়া হাসপাতালগুলোতেও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম নিশ্চিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।